রমাযান মাসতো শেষ, আবার ছয় রোজা কি?

আমরা সবাই আলহামদুলিল্লাহ রমাযান মাসে রোজা এবং ইবাদত বন্দেগীর মাধ্যমে খুব সুন্দরভাবে কাটিয়েছি।
এই রমাযান মাসের পর আমরা শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখে ঈদ পালন করি, আর সেই মাসেই আছে ছয় রোজা, আর এই ছয় রোজা রাখলে সারা বছর রোজা রাখার সওয়াব।

রমাযানের সিয়াম পালনের পর শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখা সুন্নত-মুস্তাহাব। শাওয়াল মাসে ছয়দিন রোজা রাখার বিধান রয়েছে। এ রোজা পালনের মর্যাদা অনেক বড়, এতে প্রভূত সওয়াব রয়েছে। যে ব্যক্তি এ রোজাগুলো পালন করবে সে যেন গোটা বছর রোজা রাখল। এ বিষয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে সহিহ হাদিস বর্ণিত হয়েছে। আবু আইয়ুব (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদিসে এসেছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখল এরপর শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখল সে যেন গোটা বছর রোজা রাখল।” [সহিহ মুসলিম, সুনানে আবু দাউদ, জামে তিরমিজি, সুনানে নাসায়ী ও সুনানে ইবনে মাজাহ] এ হাদিসকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অন্য বাণী দিয়ে ব্যাখ্যা করেছেন তিনি বলেন: “যে ব্যক্তি ঈদুল ফিতরের পরে ছয়দিন রোজা রাখবে সে যেন গোটা বছর রোজা রাখল:যে ব্যক্তি একটি নেকি করবে সে দশগুণ সওয়াব পাবে।” অন্য বর্ণনাতে আছে- “আল্লাহ এক নেকিকে দশগুণ করেন। সুতরাং এক মাসের রোজা দশ মাসের রোজার সমান। বাকী ছয়দিন রোজা রাখলে এক বছর হয়ে গেল।” [সুনানে নাসায়ী, সুনানে ইবনে মাজাহ] হাদিসটি সহিহ আত-তারগীব ও তারহীব (১/৪২১) গ্রন্থেও রয়েছে। সহিহ ইবনে খুজাইমাতে হাদিসটিএসেছে এ ভাষায়- “রমজান মাসের রোজা হচ্ছে দশ মাসের সমান। আর ছয়দিনের রোজা হচ্ছে- দুই মাসের সমান। এভাবে এক বছরের রোজা হয়ে গেল।”

হাম্বলি মাযহাব ও শাফেয়ি মাযহাবের ফিকাহবিদগণ স্পষ্ট উল্লেখ করেছেন যে, রমজান মাসের পর শাওয়াল মাসে ছয়দিন রোজা রাখা একবছর ফরজ রোজা পালনের সমান। অন্যথায় সাধারণ নফল রোজার ক্ষেত্রেও সওয়াব বহুগুণ হওয়া সাব্যস্ত। কেননা এক নেকিতে দশ নেকি দেয়া হয়।

এ ছাড়া শাওয়ালের ছয় রোজারাখার আরও ফায়দা হচ্ছে- অবহেলার কারণে অথবা গুনাহর কারণেরমজানের রোজার উপর যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে থাকে সেটা পুষিয়ে নেয়া। কেয়ামতের দিন ফরজ আমলের কমতি নফল আমল দিয়ে পূরণ করা হবে। যেমন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: কেয়ামতের দিন মানুষের আমলের মধ্যে সর্বপ্রথমনামাযের হিসাব নেয়া হবে। তিনি আরো বলেন: আমাদের রব ফেরেশতাদেরকে বলেন –অথচ তিনি সবকিছু জানেন- তোমরা আমার বান্দার নামাযদেখ; সেকি নামায পূর্ণভাবে আদায় করেছে নাকি নামাযে ঘাটতি করেছে। যদি পূর্ণভাবে আদায় করে থাকে তাহলে পূর্ণ নামায লেখা হয়। আর যদি কিছু ঘাটতি থাকে তখন বলেন: দেখ আমার বান্দার কোন নফল নামায আছে কিনা? যদি নফল নামায থাকে তখন বলেন: নফল নামায দিয়ে বান্দার ফরজের ঘাটতি পূর্ণ কর। এরপর অন্য আমলের হিসাব নেয়া হবে। [সুনানে আবু দাউদ]

আল্লাহই ভাল জানেন আমাদের মত বান্দার কোন ইবাদত কিভাবে কবুল হবে, তাই আসুন যতটুকু সম্ভব ইবাদত করে যাই মৃত্যুর আগ পর্যন্ত।

Share This Now

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.